তারপর তুমি নিজেই স্বীকার করে নেবে
কুরসিটা বৈধ ছিলো না!!!
রি হোসাইন, বাংলাদেশের কবি ও লেখক
গলির মাথায় একটা সেলুন ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার পর
এটা এখন একটা বিস্কুটের দোকান
তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব,
অথচ, এতদিন এখানে নজর ছিল না কারোই
দুই দল কুকুর সীমান্তযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে
দোকানটির পাশের বিদ্যুতের খুঁটিতে
পেচ্ছাব করে যায় এক কুকুর নেতা,
ওমনি সীমানা তার দলের
অপর দলের নেতা কুকুরটিও
পেচ্ছাব করে দিলো দোকানের দেয়ালে,
কখনো দোকান বন্ধ হলে
পেচ্ছাব করার প্রতিযোগিতা চলে দোকানের সাটারে
কুকুরের মানচিত্র খুবই ছোট
পাড়ায় একটা ছোট্ট গলিও
মাঝে মাঝে ভাগ হয়ে যায়
পেচ্ছাব করে করে এরা সীমানা গড়ে,
সীমানা বাড়ায়
স্বাধীন কুকুরেরা বন্দী হয়ে যায়
তাদের পেচ্ছাবের মানচিত্রে
তারপর চলে দিনভর যুদ্ধ,
পেচ্ছাবের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, দাবি-দাওয়া
এক দল খুবলে নেয় আরেক দলের মাংসপিণ্ড
কুকুরের ক্ষতে সংক্রমিত হয় পাড়া,
জন্ডিস হয়, হাঁপানি আর কারো কারো হয় কলেরা
বিস্কুটের দোকানে জমজমাট ব্যবসা চলে
কুকুরের পেচ্ছাবের গন্ধে হয়তো চায়েরও স্বাদ বাড়ে...
আমি যে সহজ ভাষায় কথা বলি
তুমি বোঝ না!
অথচ একটা শামুকও
অভেদ্য পূর্ণিমা ছেদ করে এইখানে আসে...
যার সাথে বর্ষার বোঝাপড়া বেশ
এইটা সে বোঝে, অনুরূপ নিশ্বাসে
ঝাপটা বাতাসের গান সেও গায়
আমাকে শোনায়
শুনতে কি পাও
বদলে যাওয়া ভাষায়
অন্ধকার পূর্ণিমা কি ডাক দিয়ে যায়?
আমাদের সংসার চা আর পাউরুটি'র মতো
চায়ের পেয়ালার সবটুকু চা-ই পাউরুটি খেয়ে নেয়
তারপর, আমি পাউরুটিটাই গিলে ফেলি।
দিনভর তুমি আমার সবকিছু, সমস্তই শুষে নাও
তারপর, আমি তোমাকেই গিলে ফেলি।
আমাদের এই ভালোবাসা - তৃপ্তির সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
খুব ইচ্ছে হয়,
একটা চড়ুই পাখির ঝাঁকে হারিয়ে যাই
তোমার বাসার পাশের আমগাছে
দল বেঁধে কিচিরমিচির করি
খুব ভোরে আমার ডাকেই তোমার ঘুম ভাঙুক।
এরপর দখলবাজের মত করে
আপন করে নেবো তোমার বারান্দা
মঝে মাঝে খুব সাহস করে
দরজা পেরিয়ে ঘরের কোনায় এসে
ঝগড়ায় করে যাবো ........
আমি তোমার অভ্যাস হয়ে যাবো ।
তারপর টুপ করে দেবো নিখোঁজ উড়াল
তুমি আমাকে দেখবে এবং দেখবে না
আমি সর্বত্র আছি কিন্তু কোথাও নাই
উদ্ভ্রান্ত দুপুরের তোলপাড় নিয়ে
তুমি অপেক্ষায় থাকবে, আমার উঁকিঝুঁকির.....
বিকেলের অবসাদ শেষে গোধূলির আয়োজনে
সহস্র চড়ুই পাখির কিচিরমিচিরের মাঝ থেকে
তুমি কেবল আমার ডাক খুঁজে যাবে!!!
আমি এমন একটা কবিতা লিখবো তোমার জন্য
তারপর কোন কবি
আর কোন প্রেমের কবিতা লেখার
প্রয়োজন বোধ করবে না
একটা শ্রেষ্ঠ কবিতার তুমি.....
তোমাকে ছাড়া আর কোন প্রেম হবে না পৃথিবীতে
তোমাকে নিয়ে যুদ্ধ হবে প্রেমিকদের.....
তোমাকে ছাড়া আর কোন প্রেমের কবিতা হবে না
তোমাকে নিয়ে যুদ্ধ হবে কবিদের.....
তারপর
প্রেমিকদের যুদ্ধের পর,
কবিদের হতাশার দিনে,
আমিই তোমাকে জয় করে নেবো!
আমাকে তোমার দাবি দিয়ে দেয়া হলে,
চিরায়ত প্রেমের কবিতা লেখার জন্য
আমি শব্দ আনবো কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে
বাক্য সাজাবো নীহারিকা-ছায়াপথ জুড়ে
যেখানে থাকবে তারা আর নক্ষত্রের মেলা
গ্যালাক্সির প্রতিটি কোণে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বিন্দুতে।
তারপর আর কোন প্রেম
আমার কবিতা ছাড়া নিবেদিত হবে না.....
আর কোন কবি,
প্রেমের কবিতা লেখার প্রয়োজন বোধ করবে না.....
কষ্টটাকে কষ্ট করে
ফেলেছি খুলে হৃদয় থেকে
এখন এটা আমার হাতে
এবার হবে সওদাগিরি।
তোমার থেকে সব কিনবো
ফুল কিনবো, শখ কিনবো
হাতির দাঁতের নথ কিনবো
চিবুকের তিল, খোপার বাধন,
চোখের কাজল, বুকের কাঁপন
কিনবো তোমায় উজাড় করে.....
আমার যত কষ্ট আছে
দুষ্প্রাপ্য ..
অনেক দামী...
নিলাম করে প্রেম বাজারে...
ভুল বাজারে লেনাদেনা
আর হবে না... আর হবে না।
এবার হবে সওদাগিরি
কতটা আর বিকোবে তুমি
কতটা আর বিকোতে পারো.....
কেনার পরেই ভাসিয়ে দেবো শুন্য করে
এবার তুমি শূন্য হবে
দেখবো কতটা ভাসতে পারো.....
যখন
তোমার কথায় আমার মুখ ভরে থুতু আসে
অথবা বমি পায়
তখন তুমি মুখ বন্ধ না রাখলেও
আমাকে তো আমার মুখ বন্ধ রাখতেই হয়
যখন,
তোমার জন্য আর কোন শ্রদ্ধা নেই
ভক্তি নেই...
তবে তো বিভক্তিই ভালো
তবুও তুমি দখল নিতে চাও আমার সংসার
আমার গ্রীবা কিংবা যোনী
আমাকে তো আমার মুখ বন্ধ রাখতেই হয়
তোমার লকলকে জিভের দম্ভে
তোমার হাঁ করা মুখের গন্ধে
আমি নাক-মুখ চেপে রাখি
আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হতে থাকে
তারপরও
তুমি আমার বুকের পাঁজরের সমান্তরালে
দ্রুতগামী রেলগাড়ি ছোটাও
রি হোসাইন
আমি ঠিক প্রজাপতি হতে চেয়েছি
বনানীতে
একঝাঁক চড়ুই পাখি এসে আমাদের প্রেম শিখিয়ে যায়
© রি হোসাইন