প্রথম যখন কাগজের ভাজে নৌকা বানানো শিখি
এর পর থেকে কতবার বৃষ্টির লোভে
আকাশকে ঈশ্বর বলে ডাকতাম
অথবা, ঈশ্বরকে আকাশ বলে ভাবতাম
সাদা মেঘগুলো আমাকে আশা দিয়ে চলে যেতো বারবার
কিংবা কখনো আমার ঈশ্বর স্বয়ং নেমে আসতো
স্বতঃস্ফূর্ত জলের সিঁড়ি বেয়ে, বৃষ্টি হয়ে
তখন খুব যত্ন করে নৌকা বানাতাম
কাগজের শৈল্পিক ভাজে ভাজে
আরো একটা ঈশ্বর আবিষ্কার করলাম নিজের ভিতর
তারপর আমরা যুগল ঈশ্বর মিলে এইবার নৌকা ভাসাবো
আঙ্গিনার পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা
মসদগাঁও খালের অনুকূল স্রোতে
এইভাবে সব ঠিক ছিল
শৈশবে ঈশ্বর আমার খেলার সাথী
কিংবা বৃষ্টি এবং স্রোত
আমার ভিতরের ঈশ্বর খুব ভীতু ছিলেন
আর ছিলেন প্রথাভক্ত এবং বাধ্যগত
কাগজের নৌকাগুলো ভাসিয়ে দেওয়ার পর
যখন সেগুলো দৃষ্টির আড়াল হতো
খেলা শেষ হয়ে যেতো
একদিন কোনো এক নতুন ঈশ্বর আমি খুঁজে পেলাম
আমার কৌতূহলে
একদিন প্রথা ভেঙে পিছু নিলাম স্রোতের
আমার ভাসানো নৌকাগুলোর,
কোমল স্নেহগুলোর খোঁজে
অনুকূল স্রোতের অবশেষে,
ঘোড়াদোর কাঠের পুলের পরে
খুঁজে পেলাম বিভৎস ঘূর্ণিপাক
আমার কোমল স্নেহের নৌকা
পলকেই মিলে গেলো কোথায়
আমি বহুকাল অপেক্ষায় ছিলাম
একদিন ঘূর্ণিপাক থেমে গেলেও
আমি আমার নৌকা খুঁজে পেলাম না
তারপর পেছন ফিরে পেলাম
কাঠের পুলের বদলে পাকা সেতু,
আর মসদগাঁও খাল,
সেখানে এক দুঃস্বপ্নের দেয়াল
ঈশ্বরও হারিয়ে গেলো কোথায়
সেও ফেরেনা সেই আঙ্গিনায়
বুঝতে পেলাম স্রোতের অনুকূলে
কোন পেছন ফেরা নেই
আমি তাই স্রোতের অনুকূলে চলি না
অথবা স্রোত আমার বিপরীতে চলে