শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১১

নূপুরের যাপনে




এখন শুধু নূপুরের শব্দ পাই 
যেখানে সেখানে এখানে..... 

ঘুমের ভিতরে অথবা জেগে থাকার ঘোরে
হাঁটতে হাঁটতে কোলাহলে আর 
একান্ত অবসরের নিরব গভীরে 
এখন কেবল বিভোর হয়ে থাকি 
তোমার উজাড় শব্দের অনুরণনে 

শব্দে শব্দে আকুল হয়ে যাই 
ব্যাকুল প্রেমের স্বপ্ন ডানা মেলে 
উড়ে যাবো তুমি নামের ঝড়ে 
আমায় কেবল আগলে রেখো তুমি 
তোমার স্নিগ্ধ নূপুরের যাপনে...

তৃষ্ণা




প্রতিদিনই মারা যাচ্ছি ফোঁটা ফোঁটা পানির মত 
একদিন মৃত্যুও শেষ হয়ে যাবে..... 

সেইদিন তোমার, আমার তৃষ্ণা পাবে!

নতুন কথা




এসো, এবার নতুন করে কথা বলি;

তীব্র ক্ষুধা ভুলিয়ে দেবো কথায় কথায়, 
নতুন কথায়.....

আর প্রেম নয়, স্বাধীনতা নয়, বিক্ষোভ নয়;
বন্দি হবো, বন্দিত্বে আশা রাখো। 

শীত বসন্ত, বর্ষাও নয়, নতুন ঋতু
যৌবন আর জরার খবর আর নেবো না; 
কথা হবে অমরত্বের; এবার হবে নতুন কিছু, 
নতুন ভাষায়.....

এসো এবার নতুন একটা স্বপ্ন দেখি;
নতুন রঙের.....

কথায় কথায় ব্যাথা ভুলবে ভুল পৃথিবী
তুমি আমি ভুলের মানুষ; সেই কথাটা ভুলেই যাবো; 
নতুনত্বের নতুনতায়.....

এসো, এবার নতুন শেষের গল্প লিখি

কবিতার অভ্যুত্থান চাই!



এমন কবিতা চাই-
যে সূর্যে বিস্ফোরণ ঘটাবে
চাঁদকে ছাড়খার করে দেবে
গোলাপে গোলাপে ফোটাবে গ্রেনেড
আর রজনীগন্ধাকে করবে ধারালো বেয়োনেট।

এমন একটা কবিতা লিখতে হবে,
যেটা শোষিতের রক্তে উত্তাপ জাগাবে
স্বৈরতন্ত্রের সকল তন্ত্রমন্ত্র করবে অকেজো
স্বপ্ন দেখাবে স্লোগানে স্লোগানে.....
যেখানে প্রেমের প্রতিশব্দ হবে অধিকার
আর ভালোবাসা হবে সার্বজনীন 

এইসময় এমন একটা কবিতা প্রয়োজন,
যেটা আমাদের ঘুমাতে দেবে না...
রাত্রির আঁধারে যখন ঘুমের ছায়া নামে,
আমাদের চোখে তখন তেজে ভরা বিদ্রোহের শিখা।
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রচিত হবে মহাকাব্য,
আমাদের কলমে জন্ম নেবে সংগ্রামের ভাষা।

প্রত্যেক নিঃশ্বাসে শুনি আমরা দুর্বলের কান্না,
অত্যাচারের বিরুদ্ধে উচ্চারিত প্রতিটি বাণী।
জেগে উঠি আমরা, ভেঙে ফেলি নিঃশব্দতার শিকল,
আমাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে মুক্তির গান।

এই কবিতা আমাদের অস্ত্র, আমাদের জাগরণের সুর,
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে উচ্চারণ; শেষপর্যন্ত করব।
কাঁপবে পৃথিবী, ভয় পাবে অন্ধকারের শক্তি,
আমাদের নির্ঘুম লাল লাল চোখে লেখা হবে নতুন প্রভাতের গান।

এইসময় এমনই একটা কবিতা প্রয়োজন
আমি সেই কবিতা চাই
আমি একটা তুমুল 'কবিতার অভ্যুত্থান চাই'

শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১১

সিজোফ্রেনিয়ায়



যে কবিতার কোন অর্থ নেই
সেই কবিতায়
একটা ছন্নছাড়া বিকেল ডুবিয়ে দিলাম
সন্ধ্যার মশাল মিছিল জুড়ে
স্লোগানে স্লোগানে নিবেদিত হলো প্রেম

একটা লাল গোলাপ,
ভাজ খুলে দু:খের পাপড়ি উড়ায়
একটা বাচাল কবিতায় ডুবে যাচ্ছে রাত
মাতালের চিৎকার আর
সিজোফ্রেনিয়ায়!!!
                                                        

প্রেম ভিখারী


দোকানদারী সার করেছি
মনের দায়ে আরো কিছু ধার করেছি
একলা কিছু স্বপ্ন ছিল সেগুলোকে পর করেছি
ভর করেছি প্রেমের নায়ে
এবার যাবো তোমার দ্বারে .................

ফুল কিনেছি দুল কিনেছি
চুরি ফিতা ঢাকাই কাতান
মনের মত প্রসাধনী, সব কিনেছি নিঃস্ব হয়ে
এক বাক্স প্রেম কিনেছি স্বপ্ন দিয়ে
এবার যাবো তোমার দ্বারে ..................

খুলে দেখো মনের দুয়ার
প্রেম ভিখারী কড়া নাড়ে....................

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১১

অদূরের ডাক



চোখ থেখে রক্ত কেড়ে নেবে রক্ত জবা
আমাদের করতলে অভিমানী লাঙ্গলের ফলা
এইবার থেকে আমি তুমি হবো সব হারাবার দলে
শালিকেরাও হবে সর্ব হারা

অভিশাপ থেকে চলে গেছে বৃষ্টির ছায়া
প্রজাপতি ঘুরে ফিরে আসে দু:খ দুয়ারে
অশুভ বাতাসের তোরে

রক্তের ভাষা আমি জানি না
তবু তোমাকে জানাতে হবে সেই পরিচয়
এইবার তারা করে গেল অবহেলা,
আমাকে দুলিয়ে
ফ্যাকেশে ঠোটের গান শুধু স্বপ্নের বিশ ঢালে

আমাদের ক্রোধ গুলো মাটিকে নিয়ে
আমার ক্রোধ গুলো আশাকে উড়ে না কেন ?

পরিনাম আগুন হবে




তোমাকে তোমার মত আঁকতে গেলে
পরিনাম আগুন হবে

তারপরও আমার হাতে কিছু বৃক্ষের দাবিদাওয়া আছে
বসন্তরা এত-ই অবুঝ,
থেমে আছে
তোমার আগুনে জ্বলে যাওয়া প্রেমিকের
ছাই থেকে রং নিতে,
তাই দিয়ে ফাগুন সাজাবে

কিছু পাখিদের প্রতিবাদ আছে,
আছে মাছেদের লালচোখা স্বপ্ন
সব কিছু জেনে গুল্মরা অবাক হলো
হাত ধরে সমুদ্রে নিয়ে গেলো
তোমার মত তোমাকে আঁকতে গেলে
সমুদ্র শুকিয়ে যাবে

আর শুধু বসন্ত রঙিন থেকে রঙিনতর
প্রেমিকের উচ্ছিষ্ট ছাই গুলো,
অতিথি পাখির পলকের আশ্রয় খুঁজে নেবে

জিয়ারত


আমি আমার দাদার কবর চিনতাম
এখন আর চিনিনা
দাদীর কবর, নানা ও নানির কবর আমি দেখিইনি
বাবার কবরও দেখিনি
তবুও, এর মুখে তার মুখে শুনে অনুমান করে,
এক এক শহরের এক এক গোরস্থান ঘুরে
জিয়ারত করি, দোয়া দরুদ পড়ি
আমি গোরস্থানে গোরস্থানে যাই

অভিজাত, বুদ্ধিজীবী, মাজার কিংবা গণকবর
গোরস্তানেরও বৈষম্য আছে, বিপ্লব আছে
এর মধ্যেই আমি আমার কবর খুঁজি
জিয়ারতে ক্লান্ত হবে কে, শান্ত হবে কে
ক্লান্ত বিষণ্নতায় হৃদরের বোঝা বুঝি

অতঃপর ইচ্ছে হয়
আমার জানাজায় একপাল চড়ুই পাখি ডাকুক
অংশ নিক কুকুর, বিড়াল আর দাঁড়কাক
আমার মৃতদেহ, শিমুল কাঠের কফিন
একটা বাঁশের ভেলায় সাগরে ভেসে বেড়াক

তার আগে,
আমার চোখ, কলিজা, গুর্দা, হৃদয় আর কারো হোক
আমাকে যে ভালোবাসে, তারা এইসব দেখুক
আমার এই নির্বোধ মগজ; কারো বোধের উৎস হোক...

সৃষ্টিতত্ত্ব



তোমাকে ভালোবাসার জন্য
ছয়শ কোটি বছর ধরে, জন্মে যাচ্ছি

তারও আগে,
যখন জন্মের প্রয়োজন ছিলো না,
মৃত্যু ছিলো না.... !
সেই তখন থেকে, তোমাকেই ভালোবাসি

তোমাকে ভালোবাসি বলেই
সংঘটিত হয় বিগ ব্যাং, 
শুরু হয় সময়
ছড়িয়ে পড়ে ঈশ্বর কণা,
কুন, 
ফাইয়াকুন, 
হিলিয়াম থেকে নক্ষত্রপুঞ্জ
তোমাকে ভালোবাসার জন্যই
আল্লাহ বানালো আদম, তার মধ্যে আমি

তোমাকে ভালোবাসার জন্য 
যদি একটা জীবনই যথেষ্ট হতো
তাহলে এই বিশ্বচরাচর, 
এই কক্ষপথ, 
এই ঘূর্ণন
এসবের প্রয়োজনই ছিলো না

তোমাকে ভালোবাসার জন্য 
যদি একটা জীবনই যথেষ্ট হতো
তাহলে আমি জন্মই নিতাম না.... 
তাহলে হতোনা মৃত্যুও,
এই একটা জীবনকে শেষই হতে দিতাম না... 


স্বপ্ন - ল্যাংস্টন হিউজ (অনুবাদ কবিতা)

তুমিতো জানোই,
যদি স্বপ্ন না থাকে,
জীবন একটা ডানা ভাঙা পাখির মতো
উড়তে পারে না।
তুমিতো জানোই,
যদি স্বপ্ন চলে যায়,
জীবন আর কোন শষ্য ফলায় না
একটা বরফ জমা মাঠের মতো...
আমাকে আঁকড়ে ধরো
স্বপ্ন ভেবে,
তারপর, চলো বাঁচি, বাঁচার মতো...


ভাবানুবাদ #   রি হোসাইন



ল্যাংস্টন হিউজ (১ ফেব্রুয়ারি ১৯০২ - ২২ মে ১৯৬৭) ছিলেন একজন মার্কিন কবি, কলাম লেখক, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক। হিউজ ১৯০২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিজুরির জোপলিন এ জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল শিক্ষক চার্লস হেনরি ল্যাংস্টন তার পিতা ছিলেন আফ্রো-আমেরিকানদের ভোট ও অধিকার আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী এবং মা ছিলেন শিক্ষিকা ক্যারোলিন। তিনি ছিলেন পিতামাতার দ্বিতীয় সন্তান। তার রচিত কবিতাসমূহের মধ্যে ড্রিমস (Dreams) নামক কবিতাটি অন্যতম। এটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে সিলেবাসভুক্ত।

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

ছাই



এখন আমি আনমনে পথ হেঁটে যাই 
কথা বলি রোদের সাথে
বৃষ্টিতে ভিজি অযথাই

শীতার্ত পাখিদের আপ্যায়নে
রাত কাটাই কুয়াশার সাথে
অথবা, ভুল করে তোমার গলিতে ঢুকে যাই। 

প্রতিবারই নিষিদ্ধ গলির ভিতর ঢুকে
মনে হয়; জানা যাক তোমার কুশল
জেনে যাই; কেমন ছিলে, কেমন আছো
অথবা, কি ভীষণ জ্বলি- পুড়ি, একবার দেখাই 

কড়া নাড়ার শব্দের ভুলে 
প্রতিবার দরজা খুলে
তুমি শুধু খুঁজে পাও কিছু ছাই! 


রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১১

নাসা



তোমাদের আছে আনবিক বোমা
পেন্টাগন আর নাসা
আমাদের আছে অন্তর জুড়ে
মানবিক ভালবাসা

                        মানিক রহমান এর সৌজন্যে 

শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১১

ভোতা মানুষ


আমার ক্রোধ গুলো
আমি সাজাতে পারিনা তেমন
যেমন করে মুখ বুজে সয়ে যেতে পারে
জনসাধারণ

টক শো


তুমি দারুন দারুন সব কথা কও
আমার মজা লাগে.... আমি হোগা মাথা কিছু-ই বুঝিনা
তবু ও মজা লাগে... তোমার সব কিছু-ই আমার মজা লাগে
সবচে বেশি মজা লাগে তোমারে টেলিভিশনে যহন দেহি ....
আমি সিরিয়াল ফালাইয়া থুইয়া তোমারে দেহি .. খালি তোমারেই দেহি
আমি কমেডি সার্কাস এর থেইকা ও বেশি তোমারে দেইখাই হাসি
আমি হোগা মাথা কিছু-ই বুজি না তবুও হাসি ........ আমার খুব মজা লাগে...

খালি মজা লাগে না বড় বড় রাইত গুলা ...... শেষ আর হয় না
খালি তোমার পয়সা উসুল হয় ...
আমারে খালি তহনই তোমার মজা লাগে

শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১১

প্রেম হলো না



পালাবার কোনো পথ ছিল না
অপরাধী প্রেম অনুতাপ নিয়ে
লুকিয়ে ছিল প্রেমের ভিতরে
তোমাতে তবুও প্রেম হলো না।

উজাড় প্রেমের যন্ত্রনাতে আমি দিশাহারা
হাঁটতে বসতে ইলিশ মাছেও তোমার চেহারা
মিশে থাকো সব কথা আর গানে
তুমি তুমি শুধু চারপাশ ঘেরা
তবুও যে হায় সাধ মিটে না.....
সবকিছু গেলো সে প্রেমের তরে...
প্রেমিক তোমার
 সার্থক হলো....
 সার্থক হলো....
পুরোটা জীবন প্রেম করে গেলো
তোমাতে তবুও প্রেম হলো না!

পালাবার পথ থাকতো যদি...
আর যতসব প্রেমিক তোমার
লুকানো প্রেমের মন্ত্রনাতে
ছিনিয়ে তাদের হৃদয়ের তাস
নিবেদিত প্রেম উড়িয়ে দিতাম প্রেম জুয়াতে
চারিদিকে তুমি খুঁজে পেতে শুধু আমার বাতাস
পালাবার পথ থাকতো যদি...
চিরায়ত প্রেমে তোমাতেই পড়ে
দৌড়ে পালাতাম!

পালাবার পথ থাকতো যদি...
জনম জনম একমাত্র
আমিই তোমার প্রেমিক হতাম!

এইবার হবে



এইবার হবে
তোমার সমস্ত কোষে কোষে, স্নায়ুর ভিতর
আমার একটা কিছু হবে

না থাকার মতো করে


তুমি দেখো নাই তুমি চেন নাই
তুমি জানো নাই আর জানবে না কখনো
ভালবাসা.... তোমারে ভালোবেসে যাবো গোপন করে

আমি থাকি সবসময় তোমার পাশে
না থাকার মতো করে......


আমদানি


এইবার জেগে উঠবে
জেগে উঠবে তারা বিদেশী নর্তকীর
গোস্তের উত্তালে .............. এই বার হবে জম জমাট
লড়াইয়ে.... দেশী গনীকারা কোথায় যাবে?
হায় হায় কোথায় যাবে....................
মুখ বন্ধ সুশীল সমাজ ..........
চোখ খোলা রাখে.......... গোস্তের উত্তালে ......

রাশিচক্র


আমি সিংহ, তুমি মিথুন ছিলে
অথচ কি ভুল.... তুমি-ই আমায় খেলে
রাশিচক্র ভুল... ভুল না হলে কি হায়
খাদ্য খাদকেরে খায়?

তুমি খেলে এমন তাচ্ছিল্যে
খেলে না; আসলে, জুঠা করে দিলে
শুশ্রুষায়, সোহাগে যতনে
অবশেষে ছুঁড়ে ফেলে দিলে
রাশিচক্র ঠিক.... ঠিক না হলে কি হায়
মিথুনে মিথুন মিলে যায়?

এখন আর জুঠারে কে খায়?

পারফিউম



চোখের কঠিনে, গভীর ভিতরে দেখো
দেখো শক্ত চোয়ালে, পোড়া চামড়ায় ছুঁয়ে  
গনগনে সূর্যের সাথে মিতালী আমার।  

কারখানার ঝলসানো কয়লারা আমার আত্নীয়
আমি কৃষক, আমি শ্রমিক, আমি খেটে খাওয়া মজুর
খুব কাছাকাছি এসে শুঁকে দেখো ঘামের গন্ধ আমার। 


কিছু কি চেনা চেনা মনে হয়? 
ইটারনিটি কিংবা স্যানেলের.... 

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১১

বিদ্রোহে


এইবার দেখে নেবো অসীম সাহসে
উত্তাল সমুদ্র জাগে এই বনবাসে
এইবার হবে জীবনের জুয়া হতাশার দেশে


মৃত্যুকে পুষে নিয়ে বুকের ভিতরে
আমি ঠিক ধরে যাব জীবনের বাজি
তোরা কে কে যাবি বিদ্রোহে আয় কে কে রাজি

সুযোগ পেলে কৃষক হতাম

ফুল বানাতাম, ফল বানাতাম
হলুদ রঙের বন বানাতাম
বীজ বুনতাম, সুখ ফসলের
স্বপ্নগুলো নবান্নতে ছড়িয়ে দিতাম।

সবুজ রঙের ভালবাসা
হাত পেতেছে.....
হাত পেতেছে
তোমার কাছে মহারানী, 
বর্গা দেবে হৃদয় খানি?
বীজ বুনতাম সুখ ফসলের.....

যদি আমি সুযোগ পেতাম
কবি না হয়ে কৃষক হতাম!


খেলা


ভেতরে ভেতরে খেলে যাচ্ছি ভাঙ্গা গড়ার খেলা
ভাল্লাগেনা তোমার অবহেলা
আবার বানাই আবার ভাঙ্গি বানাই ভাঙ্গি
অকাল আমার কাল হয়ছে বিষন্ন এই বেলা

বান্ধবলো


তোমারে না কইছি উত্তরমিহি পাও দিয়া ঘুমাইতে নাই
কইছিলাম না দাত দিয়া নখ কাইটটো না
.................................মনে নাই ?
আমি জানি আমার কতা তোমার কিচ্ছু মনে নাই

গত রাইতের অন্ধকারে কই অছিলা, ভুইল্লা গেছ?
বান্ধবলো, কেমুন আছো?

অভিনন্দন!!!



তোমাকে অভিনন্দন জানাবো কি দিয়ে?
আমি ঠিক নিশ্চিত নই যে,
এই ফুলগুলো তোমার জন্য ফুটেছে কিনা;

অথবা এই গান?
এই বৃষ্টি তোমার জন্য ঝরছে কিনা;

এমনকি আমারই বা কি আছে তোমাকে দেবার
আর আমিই বা কে তোমার যোগ্যতার

এ বিজয় তোমার জন্য নতুন নয়
এ আকাশ তোমার চেনা
এই উড়াল তুমি অনেক দিয়েছো আগে

কত শত অভিনন্দনের জোয়ারে ভেসেছো
অথচ যারা সেগুলো দিয়েছে; 
সেগুলো কি তাদের ছিলো?
একবার এমন কিছুকি পেয়েছিলে; যা একান্ত ছিলো
যা আর কারো ছিলো না কোন দিন!

আমি আর কিইবা দিতে পারি
কিছু শব্দ! হয়তো তা অনেক শুনেছো
তবু এ আমার আপন কণ্ঠস্বর
এই উচ্চারণের আমিই একমাত্র ঈশ্বর!

 রি হোসাইন

আমার সাদা ভাত


কমপক্ষে দুই থালা ভাত খেতাম
আলু ভর্তার সাথে ডাল হলেও
গরু ভুনা হলেতো কথাই নাই,
আরো কয়েক চামচ অতিরিক্ত
বাঁধা নাই

আচার বানাতে পারি,
আম, রসুন এমনকি সবুজ মরিচের
ঈশ্বর আমাকে তৃপ্ত হবার ক্ষমতা দিয়েছেন প্রচুর

আমার দুঃখী ভাত
অনাহারে থাকে চির শীতকালের ভিতর
আহারে, তাদের ঠান্ডা লাগে

আমার কলিজাটা বড় হয়ে গেছে
সাহস বেড়েছে প্রচুর,
ভুলে থাকি ভাত
মেপে মেপে ট্রাইগ্লিসারাইড,
বিষাদ খেয়ে বাঁচি, সকাল, রাত আর দুপুর

ঈশ্বর আমাকে তৃপ্ত হবার ক্ষমতা দিয়েছেন প্রচুর

 রি হোসাইন

বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১১

সকাল



একটা দীর্ঘ রাত্রী ছিলো 
অথবা তুমি ঘুমিয়ে ছিলে.....

আমি একটা অন্ধ সমুদ্র নিয়ে 
এলোমেলো কত ঝড় 
আর জলোচ্ছ্বাস নিয়ে তোলপাড় 
অথবা তুমি ঘুমিয়ে ছিলে.....

ঘুম থেকে জাগানোর পর
আমার পাখিরাও উঠেছে জেগে
ভীমপলশ্রী নয় ভৈরবী রাগে
চৌকাঠে শীতার্ত সূর্যের স্নিগ্ধ উঁকি-ঝুঁকি 

তোমাকে ঘুম থেকে জাগানোর পর
সকালের জন্ম হয়, 
আসে আনকোরা ভোর।


মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১১

আমি হলে



আমি হলে বসন্তকে বদলে দিতাম
শীত হতো না, 
সারাটা কাল হেমন্ত-তে ছড়িয়ে দিতাম।

আমি হলে বর্ষা হতো কালেভদ্রে, বৃষ্টি হত সবুজ রঙের
আমার মতো সবকিছুকেই 
রাঙিয়ে নিতাম তোমার রঙে.....

আমি যেমন ডুবে থাকি তোমার কালে
আমি হলে
সেটাই হতো একমাত্র বসন্তকাল!

মরুভূমি



আমি তোমায় বানাবো না 
মেলাবো না, জোড়াবো না, 
ভাঙ্গবো শুধু.....
আমার আছে মরুভূমি একটা ধূঁধূঁ

সেখানে জল তুমি শুধু তোমার মত
আমার ভিতর তৃষ্ণা চলে অবিরত,
আমি শুধু ভাঙ্গন ডাকি, তীব্র ভাঙ্গন
মুরুভুমির ভাঙ্গন তুমি দেখবে কত?

আমি কেবল ভাঙ্গতে জানি
এক জনমে আমি ছিলাম নদীর মত.....

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১১

শীতার্ত বেড়াল


ভেবেছিলাম বেড়াল হয়ে তোমার ঘরে ঢুকব এবার
হাত বুলাবে কোমল পিঠে , কোমল হাতের আগুন জ্বেলে 
প্রেম দেবে এই তীব্র শীতে 
ভেবেছিলাম বেড়াল হব 

রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১১

কবি


 
যদি এক সপ্তাহ কবিতা লিখতে না পারি
অথবা এক মাস, এক বছর
যদি অনন্তকাল পর্যন্ত কবিতা আমার কলমে না আসে?

যদি আমি ঘুমিয়ে যাই,
যদি হাঁটতে থাকি, ফুটপাতে সোয়েটার বেচি
বাসের টিকিট চেকিং করি
আর আয়রন মিলের বয়লার স্যুটে গরম লোহায় ভাসি
ডেলিভারি করি দুপুরের লাঞ্চ 
যদি লোকাল বাসের হাতলে ঝুলে থাকে আমার সময়

যদি আমার কবিতাগুলো লিখতে থাকে
অন্য কোনো কবি
অন্য কোনো জগতে,
 এবং অন্য ভাষায়... 
অন্য মহাকাশ জুড়ে যদি আমারই হাহাকার ছড়িয়ে যায়

যেই বিষুবরেখায় আমার মধ্যাকর্ষণ নাই
অথচ, 
সেই মহাসাগরের ঢেউগুলো সব আমার
যদি আমার কবিতাগুলো ফিরে আসে মৃত্যুর পর
আমার উড়ে যাওয়া আত্মার ভিতর

আমি কি শ্রেষ্ঠ কবি নই, না লেখা কবিতাগুলোর 
 
রি হোসাইন

এই বর্ষায়


কিছুক্ষণ আগে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল মনের ভিতর.
মন আমার কোমল পলি উর্বর

এই বর্ষায় একটু না হয় আমায় দেখে যেও
ভালবাসার চারা গাছে একটু যত্ন নিও.

ভুলে


আমি কাঁটা
আমি ফুলবনে গিয়েছিলাম ভুলে
বসন্ত কি আর আমার হওয়ার?

অভিযান


তোমার ভেতরে ঢুকি
ভেতরের সব এলোমেলো করে
তোমাকেই শুধু খুজি!!!

তখন

তখন তুমি আকাশ দেখো
তখন আমি তোমার নীল শাড়ী দেখি
তখন আমি ভুলে যাই আকাশ নীল
তখন আমি আকাশ খুজি তোমার চোখে.

দুরত্ব

খুব কাছাকাছি থাকো
বারুদ থেকে আগুনের দুরত্ব যত
প্রতিটা উতপ্ত নিঃশ্বাসে তোমার অস্তিত্ব টের পাই
নষ্ট ফাল্গুনের দিনে আমাদের এইতো দুরত্ব 

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১১

আমি-ই তোমার এক মাত্র সবুজ ব্যথা




এখন তুমি কেমন আছো?
কেমন করে এখন তুমি স্বপ্ন দেখো?
তোমার চোখে নিজের করে যেই স্বপ্ন দেখেছিলাম
সেই স্বপ্নে এখন তুমি কেমন আছো?

আমার কথা থাকলো না হয় বুকসেল্ফ-এ
কিংবা কাঠের আলমিরাতে
ঘুণে খবে? খাক না তবে......
স্বপ্ন চোরের সাজা হবে এইটুকুতেই......

‘ভালো থেকো ’ কেমন করে বলতে পারি
যার গেছে, সে-ইতো জানে যাওয়ার ব্যথা;
আমি জানি তোমার সকল দুঃখের কথা
আমি-ই তোমার এক মাত্র সবুজ ব্যথা!

তোমার ব্যথা, আমার কথা, ভালো থাকা
পৃথিবীটা বুঝবে না যে এসব কথা......
আমি-ই তোমার এক মাত্র সবুজ ব্যথা!

বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১১

তীর্থ

আমার যে মৃত শরীর এঁটে গেছে

হেঁটে চলা জুতার ভিতর

আর, আমি একটা চলমান কবর


যদি মনে পড়ে, জিয়ারতের ইচ্ছা হয়

জোনাকির ভাষায় যে বাতাস কথা বলে

তার কাছে মনের ইচ্ছা বলে দিও

আর, জানালার একটা কপাট খুলে রেখো


আমি খুঁজে নেবো

জানালার একটা কপাট খোলা রাখা অন্ধকার ঘর

হয়তোবা আকাশ নয়তো পরিত্যক্ত কবর


রি হোসাইন

ফাগুন জ্বলে


পা ছুঁয়েছে জল
জলের বুঝি প্রাণটা এবার জলেই গেলো
তল খুঁজো না অতল জলে.....
কোথায় জানি জলের তলে আগুন জ্বলে
সেথায় আমার ফাগুন জ্বলে.....

লিলিথের পাঁজর


 
মনে করো তারপর,
সবকিছু ধ্বংসের পর,
ইশ্বরের আবার ইচ্ছে হলো
মানুষ বানানো
আগের মতোই, পৃথিবীর মাটি দিয়েই

কিন্তু এবার ভিন্ন ইচ্ছে হলো,
আগে আদম নয়, .
কেবলমাত্র লিলিথকেই বানালো প্রথম
তারপর,
লিলিথের পাঁজরের হাড় থেকে
বানালো আদম...

লিলিথের গর্ভ থেকে
জন্মাতে থাকলো নারীরা
আর পুরুষেরা নারীর পাঁজর থেকে
স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হলোনা কেউ 

এইদিকে
পরাজিত সামায়েল কিংবা শয়তান
পৃথিবীর দখল নিয়ে নিলো
তাদেরও সংসার হলো,
ঘুঘু পাখিদের সাথে

অথচ তারপর,
স্বর্গবাসী পূর্ণবান মানুষেরা
পৃথিবী-ই পেতে চাইলো মৃত্যুর পর
পুণ্যের পুরস্কারে চাইলো
চড়ুই পাখির সংসার...!!!



রি হোসাইন

লালের কথা


লালে আমি অন্ধ হয়ে অন্ধকারে 
লালে আমি লালায়িত পশুর মত
লালে আমার এলার্জি হয় 

লালে তুমি আগুনলাগা বসন্ত কাল
তোমার লালে বিষ্ফোরিত আমার সকাল
এতেই আমার লতায় পাতায় বসন্ত পায়